শেষ সিপাহীর রক্ত ও কিছু কথা

(কিছুদিন আগে এক পোস্টে জুরজি যায়দান সম্পর্কে গবেষকদের মূল্যায়ন উদ্ধৃত করেছি। নবপ্রকাশ কর্তৃক প্রকাশিত জুরজির বই ‘ হাজ্জাজ বিন ইউসুফ’ এর ভূমিকাতে জুরজির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করা হয়েছে। এতে করে জুরজিকে প্রমোট করা হয়েছে। আর তা থেকে সতর্ক করতেই সেই পোস্ট দেই। (পোস্টের লিংক প্রথম কমেন্টে)। সেই পোস্টের পর অনুবাদক এবং নবপ্রকাশ সংশ্লিষ্ট আরো দুয়েকজনের বক্তব্য ছিল, এই বইতে কোনো সমস্যা থাকলে বলুন। অনুবাদক সাহেব এতদূর পর্যন্ত বলেছিলেন, এই বইয়ের তথ্যগুলো নির্ভরযোগ্য ইতিহাসগ্রন্থ থেকে যাচাই করে নিয়েছি। ভক্তদের কেউ কেউ বলেছিলেন, অনুবাদক একজন আলেম। তাই এই বইতে সমস্যা থাকার কথা নয়। সে সময় আমার মূল আপত্তি ছিল, জুরজির বইপত্র অনুবাদ করা নিয়ে। নির্দিষ্ট ভাবে এই বই নিয়ে কিছুই বলিনি। যাই হোক, পরে বইটি পড়া হয়েছে এবং মনে হয়েছে ইতিহাসের একজন পাঠক হিসেবে কিছু কথা বলা দরকার। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আজকের এই লেখা। )

প্রথমে বইয়ের মূল কাহিনী বলে নেয়া যাক। এটি একটি ইতিহাস-আশ্রিত উপন্যাস। সময়কাল ৭৩ হিজরী। আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর মক্কায় অবরুদ্ধ। মক্কা ঘিরে রেখেছে হাজ্জাজ বিন ইউসুফের বাহিনী। মিনজানিক থেকে পাথর নিক্ষেপ করা হচ্ছে কাবার দিকে। সেই অস্থির সময়ে হাসান নামে এক যুবকের আগমন ঘটে । সে এসেছে আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইরের সাথে সাক্ষাত করতে। একইসাথে তাঁর প্রেমিকা সুমাইয়ার সাথেও দেখা করতে হবে তাঁকে। যুদ্ধের ভেতর দিয়েই এগিয়ে চলে হাসান সুমাইয়ার প্রেমকাহিনী। আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইরের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যুদ্ধ শেষ হয়। নানা ঘটনার পরে হাসান-সুমাইয়ার মিলন ঘটে। উপন্যাসও সমাপ্ত হয়।

প্রথমেই আমরা এই কাহিনীর কলকব্জা একটু নেড়ে দেখবো। ইতিহাস আর উপন্যাসকে আলাদা করে ফেলবো। কোনটা সত্য আর কোনটা জুরজির কল্পনা তা আলাদা করে ফেলব। অন্য কোনো উপন্যাসের ক্ষেত্রে এমনটা করা দরকার ছিল না। কিন্তু এখানে দরকার। কারণ, এই বইয়ের কাহিনী এগিয়ে গেছে ৭৩ হিজরীতে। যেটা খাইরুল কুরুনের যুগ। তখনো জীবিত আছেন সাহাবীদের অনেকে। এই বইয়ের কাহিনী এগিয়েছে মাদীনাতুর রাসুল ইয়াসরিব এবং পবিত্র শহর মক্কার গলিপথ ধরে। এই বইয়ে উল্লেখিত তথ্যের সামান্য বিকৃতিও আঘাত করতে পারে এই উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। সেই স্বর্নালী সময় সম্পর্কে আমাদের মানসপটে একে দিতে পারে বিকৃত চিত্র। তাই এখানে বর্ণিত সকল তথ্য প্রথমে আমরা দুভাগ করে ফেলবো। যেগুলো জুরজির কল্পনা সেগুলো বাদ দিব। বাকি থাকবে ইতিহাস। আমরা দেখবো ইতিহাস বর্ননার ক্ষেত্রে জুরজি কতটা স্বচ্ছতার পরিচয় দিয়েছে। সামনের আলোচনায় যাওয়ার পূর্বে আবারো মনে করিয়ে দিচ্ছি, উপন্যাসটি লেখা হয়েছে ৭৩ হিজরীর ঘটনাবলীকে কেন্দ্র করে এবং উপন্যাসের চরিত্ররা ঘুরে বেরিয়েছে মক্কা-মদীনা, এই দুই পবিত্র শহরে।

দুই কাল্পনিক চরিত্র

বইয়ের মূল চরিত্র হল হাসান ও সুমাইয়া। জুরজি এই দুই চরিত্রের চিত্রায়ন এমনভাবে করেছে, সাধারণ পাঠক ভাবতে পারেন এরা ঐতিহাসিক চরিত্র। কিন্তু ড. শাওকি আবু খলিল বিস্তারিত অনুসন্ধান শেষে জানিয়েছেন, এই দুই চরিত্র জুরজির তৈরী। ইতিহাসে তাদের কোনো উল্লেখ নেই। (১)
এই দুই চরিত্র কাল্পনিক, ফলে এই দুই চরিত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট বইয়ের বিশাল অংশ কাল্পনিক তথ্যে ভরপুর। সমস্যা হলো এর মধ্যে এমন কিছু অংশ আছে যা পাঠক মনে করবে ইতিহাসের অংশ অথচ তা কাল্পনিক, বানোয়াট। যেমন-
১। হাসানের সাথে আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইরের আলাপচারিতা। (১৫০ ও ১৯৬ পৃষ্ঠা)
২। হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ও সুমাইয়ার বিয়ের ঘটনা। (১৫৭ পৃষ্ঠা)
৩। আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ানের পক্ষ থেকে হাজ্জাজ বিন ইউসুফকে পত্র লেখা। (২১৭ পৃষ্ঠা)
আরো সহজভাবে বলে দিলে, হাসান ও সুমাইয়ার সাথে সম্পর্কিত যত ঘটনা আছে এই বইতে সবই বানোয়াট ও কাল্পনিক।

আজজাহ-আল-মায়লা

অনূদিত বইয়ের ১৯ পৃষ্ঠায় আছে, হিজরি প্রথম শতকের মাঝামাঝি সময়ে মদিনায় একজন বিখ্যাত গায়িকা ছিলেন। তার নাম আজজাহ আল মায়লা।… মদীনায় কেউ এলে একবারের জন্য হলেও আজজাহর গান শোনার বা তাকে দেখার ইচ্ছা হতো তার। … গানের আসরে তিনি যখন গান গাইতেন, তখন উপস্থিত সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনত তার গান। সবাই এতটাই মোহাচ্ছন্ন হয়ে যেত, মনে হতো তাদের মাথার উপর পাখি বসে আছে।

জুরজি আমাদেরকে একজন গায়িকার কথা জানাচ্ছেন, যিনি হিজরি প্রথম শতকের মাঝামাঝি মদিনায় বাস করতেন। তিনি গানের আসর করতেন। মদীনায় যারা আসতো তারা এই আসরে উপস্থিত হওয়ার ইচ্ছা রাখতো। এই গায়িকার সন্ধান করে আসা যাক। প্রথমে দেখা যাক এই গায়িকা সম্পর্কে ইতিহাস কী বলে? সর্বপ্রথম আজজাহ আল মায়লার কথা আলোচনা করেছেন আবুল ফারাজ ইস্ফাহানি (মৃত্যু ৩৫৬ হিজরী) তার রচিত ‘আল আগানি’ গ্রন্থে। তার থেকে উদ্ধৃত করেছেন খাইরুদ্দিন যিরিকলি ‘আল আলাম’ গ্রন্থে (৪র্থ খন্ড, ২৩০ পৃষ্ঠা)। জুরজি যায়দানও এই চরিত্রটি নিয়েছেন আল আগানি গ্রন্থ থেকেই। মূল বইয়ের শুরুতে তিনি কয়েকটি বইয়ের নাম দিয়েছেন, যা থেকে তিনি ইতিহাসের তথ্য নিয়েছেন বলে দাবী করেছেন। তবে অনূদিত বইতে এই বইগুলোর নাম আসেনি। অনুবাদককে পুরো দোষারোপ করা যাচ্ছে না, সম্ভবত তিনি সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত অনলাইন সংস্করণ দেখে অনুবাদ করেছেন। এবার দেখা যাক জুরজির সেই আল আগানি গ্রন্থের লেখক আবুল ফারাজ সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিকগণ কী বলেন।

ইবনুল জাওযি রহিমাহুল্লাহ তার সম্পর্কে লিখেছেন, তিনি তার গ্রন্থে পাপাচার উসকে দিয়েছেন। মদপানকে হালকা করে দেখিয়েছন। যে কেউই গভীরভাবে তার আল আগানি গ্রন্থ পর্যবেক্ষণ করলে সেখানে শুধু ঘৃণ্য আর খারাপ কাজের বর্ননাই পাবেন। (২)
আবু মুহাম্মদ হাসান বিন হাসান নুবাখতির সূত্রে খতীব বাগদাদি তাকে মিথ্যুক বলেছেন। (৩)
আবুল ফারাজ ইস্ফাহানী ছিলেন শিয়া। তার বইটিও ইতিহাসের কোনো নির্ভরযোগ্য বই নয়। ইমাম যাহাবী লিখেছেন, তিনি আজব আজব সব ঘটনা বর্ননা করেছেন। (৪)

আবুল ফারাজ ইস্ফাহানী ও তার গ্রন্থ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা হলো। এবার দেখা যাক, আজজাহ আল মায়লা সম্পর্কে তিনি কী লিখেছেন। তিনি লিখেছেন, আজজাহ আল মায়লা মদীনার বিখ্যাত মহিলা গায়ক। উমর বিন আবি রবিআ ও তুয়াইস তার গৃহে যেতেন গান শুনতে। (৫)
এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হলো, আল আগানি কোনো গ্রহণযোগ্য গ্রন্থ নয়। সেখানে সত্য মিথ্যা নানা ধরণের তথ্যই আছে। অপরদিকে আজজাহ আল মায়লা সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিকদের কেউই কিছু লিখেননি। পরে যারা লিখেছেন তারা আল আগানির সূত্রে লিখেছেন। সুতরাং প্রথমেই আজজাহ আল মায়লার অস্তিত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। আর এই চরিত্র যদি সত্যও হয় তবু মদীনায় তার গানের আসর হতো এমন কথা কোথাও উল্লেখ নেই। আবুল ফারাজের বর্ননা থেকে জানা যায়, দুয়েকজন লোক তার গৃহে গিয়ে গান শুনতো। অথচ জুরজি লিখেছেন, গানের আসরে তিনি যখন গান গাইতেন, তখন উপস্থিত সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনত তার গান। সবাই এতটাই মোহাচ্ছন্ন হয়ে যেত, মনে হতো তাদের মাথার উপর পাখি বসে আছে।
আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে এটা সাধারণ একটা বিষয়। একটা উপন্যাসে তো সব সত্য লেখা হবে না। এজন্য আগেই বলেছি, মাথায় রাখতে হবে এই উপন্যাসের ঘটনাপ্রবাহের স্থান ও সময়কাল। জুরজি চিত্রায়ন করছে ৭৩ হিজরীর মদীনাকে। আর লিখছে, মদীনায় কেউ এলে একবারের জন্য হলেও আজজাহর গান শোনার বা তাকে দেখার ইচ্ছা হতো তার।

একবার ভাবুন কী বিষ লুকিয়ে আছে এই এক দুটি বাক্যের আড়ালে। মদীনায় সেসময় সফর হতো যিয়ারতের উদ্দেশ্যে অথবা ইলম অর্জনের উদ্দেশ্যে। এটা খাইরুল কুরুনের যুগের কথা। যখন ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া মাসমুদি ‘হাতি’ দেখার জন্যেও ইমাম মালিকের দরসগাহ থেকে বের হননি। এমনই নিমগ্নতা ও একাগ্রতা ছিল তাদের। অথচ তাদের সম্পর্কে বলা হচ্ছে মদীনায় এলে তাদের আজজাহর গান শোনার ইচ্ছে হতো। (আজ্জাহর অস্তিত্বই প্রশ্নবিদ্ধ। আর গানের আসরের কথা তো কোনোভাবেই প্রমাণিত নয়)। জুরজির এই এক লাইনেই সেকালের মদীনার সামাজিক অবস্থা ও শহরবাসী সম্পর্কে বিকৃত চিত্র একে দিবে পাঠক-মানসে।

বিকৃত চিত্রায়ণ

এই বইয়ের অনেক তথ্যই প্রকৃত ইতিহাসের বিপরীত। যেহেতু এটি ইতিহাসের বই নয়, স্রেফ উপন্যাস (যদিও বইয়ের ফ্ল্যাপে লেখা আছে, এই বইটি নাকি উপন্যাসের চেয়ে বেশি কিছু) তাই এসব নিয়ে এই পোস্টে আলোচনা করবো না। শুধু একটা জায়গায় ফোকাস করার চেষ্টা করছি। জুরজি এই বইয়ের মাধ্যমে মদীনার সামাজিক জীবনের যে চিত্রায়ন করেছে তা কোনোভাবেই ইতিহাস সত্যায়ন করে না। কৌশলে সে সেকালের মদীনার জনজীবন সম্পর্কে বিকৃত চিত্র একে দিয়েছে। তার এই বিকৃতি কখনো কখনো এতই স্পষ্ট যে সীরাতের সাথে যাদের সামান্য সম্পর্ক আছে তারাও ধরে ফেলতে পারবেন। অথচ আমাদের অনুবাদক নির্দ্বিধায় তা অনুবাদ করে গেছেন। উদাহরণ দেয়া যাক
১। অনূদিত বইয়ের ৬৫ পৃষ্ঠায় আছে সাকিনা বিনতু হোসাইনের গৃহে গানের আসর বসেছে। কবিরা এসেছে মহিলারা এসেছে। দাসীরা উপহার দিচ্ছে। এর না কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি আছে। না হযরত আলী (রা) এর নাতনী সম্পর্কে এমন তথ্য বিশ্বাস করা যায়।
২। ৪২ পৃষ্ঠায় দেখা যায়, হাসান অনুমতি না নিয়েই সুমাইয়াদের ঘরে ঢুকে পড়ে। সুমাইয়াকে দেখে ফেলে। খাইরুল কুরুনের যুগে মুসলমানদের সামাজিক জীবনের সাথে এই চিত্রায়ণ কখনোই মানানসই হয় না। অবশ্য পুরো ঘটনাই তো মিথ্যা, কারণ এই দুই চরিত্রের অস্তিত্বই নেই।
৩। ৪৬ পৃষ্ঠায় দেখা যায় সুমাইয়ার বাবা তার জীবনরক্ষক হাসানকে হত্যা করার কৌশল করে।

নিষ্পাপ এক প্রেমকাহিনি

বইয়ের ফ্ল্যাপে লেখা হয়েছে, সেই সময়ের এক নিষ্পাপ প্রেমকাহিনির হাত ধরে পাঠক প্রবেশ করবেন খেলাফত রক্ষার এক সাহসী সংগ্রামে।
এবার নিষ্পাপ প্রেমকাহিনীর অবস্থা দেখা যাক
১। সুমাইয়া বারবার আত্মহত্যা করতে চায়। এমনকি হাসানের সাথে দেখা করার জন্য সে ঘর থেকে বের হয়ে নির্জনে আসে।
২। ২০৬ পৃষ্ঠায় হাসানের বক্তব্য, যদি আমাকে মেরে ফেলে তাহলে ভাববে তোমার ভালোবাসায় আমি শহীদ হয়েছি। (নাউজুবিল্লাহ)
যদিও চরিত্রগুলি মিথ্যা, ঘটনাগুলিও। কিন্তু এইসব চিত্রায়ন পাঠকের মনে উপস্থাপন করবে অন্য এক মদীনাকে। এ যেন উম্মে কুলসুমের কায়রো কিংবা আনারকলির লাহোর। যেখানে গান, নারী ও প্রেমই শেষ কথা।
জুরজির লেখা অনুবাদ প্রসঙ্গে আগেও কথা বলেছি। প্রকাশকরা বলেছিলেন তারা বইকে যাচাই-বাছাই করেই অনুবাদ করবেন। ভূল কিছু থাকলে বাদ দেবেন। অথচ দেখা গেল হুবহু অনুবাদ হয়েছে। জুরজি যে বিষ ছড়িয়েছিল আরবিতে, তা বাংলাতেও চলে এসেছে। সাধারণ পাঠককে সাবধান করা দরকার ছিল, আমরা শুধু সে দায়িত্বই পালন করছি। নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের নিয়তের ব্যাপারে জানেন।

সূত্র
—————
১। জুরজি যায়দান ফিল মিযান, পৃষ্ঠা- ১০৫– ড. শাওকি আবু খলিল।
২। আল মুন্তাজাম, খন্ড ১৪, পৃষ্ঠা ১৮৫– ইবনুল জাওযি। দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা। বৈরুত, লেবানন।
৩। মিযানুল ইতেদাল, ৫ম খন্ড, ১৫১ পৃষ্ঠা– হাফেজ শামসুদ্দিন যাহাবী। দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা। বৈরুত, লেবানন।
৪। প্রাগুক্ত।
৫। আল আগানি, খন্ড ১৬, পৃষ্ঠা ১৪– আবুল ফারাজ ইস্ফাহানি।

অন্যান্য লেখা

বইয়ের ক্যাটালগ ডাউনলোড করুন